হামার জীবনের উদ্দেশ্য টা কি

হামার জীবনের উদ্দেশ্য টা কি
July 24, 2024- No Comments
আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক।
আস-সালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহু As Salaam Wa Alaikum Wa Rehmatullahi Wa Barakatuhu (ٱلسَّلَامُ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَةُ ٱللَّٰهِ وَبَرَكَاتُهُ)।

আপনাকে অভিনন্দন !!

আশা করি আপনারা সবাই ভাল আছেন ।হামার জীবনের উদ্দেশ্য টা কি ? এটি জানতে হলে অবশ্যই আগে আমাদের জানতে হবে যে ,আমাদের জীবনের উদ্দেশ্য কি ?আমার জীবনের উদ্দেশ্য কি ?আর আমাদের জীবনের উদ্দেশ্য কি এ দুটি বাক্য একই বিষয় একই জিনিস বুঝিয়েছে এখানে মূল বিষয় হচ্ছে জীবনের উদ্দেশ্যটা কি ?তা আমাদের জানতে হবে । আজকে আমি আপনাদের জানাবো জীবনের উদ্দেশ্যটা কি অথবা আমার জীবনের উদ্দেশ্য টা কি অথবা হামার জীবনের উদ্দেশ্য টা কি ?

আমাদের জীবনের উদ্দেশ্য নিয়ে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে বিভিন্ন মতামত রয়েছে। এটা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত, সাংস্কৃতিক, এবং দার্শনিক দৃষ্টিকোণের উপর নির্ভর করে। কিছু সাধারণ দৃষ্টিভঙ্গি হলো:

ব্যক্তিগত সন্তুষ্টি এবং সুখ: অনেকেই মনে করেন যে জীবনের মূল উদ্দেশ্য হলো নিজের এবং প্রিয়জনদের সুখ এবং সন্তুষ্টি অর্জন করা।
নৈতিক ও মানবিক মূল্যবোধ: কিছু মানুষ বিশ্বাস করেন যে জীবনের উদ্দেশ্য হলো নৈতিক ও মানবিক মূল্যবোধ বজায় রেখে জীবনযাপন করা এবং অন্যের কল্যাণে কাজ করা।
আধ্যাত্মিকতা: কেউ কেউ মনে করেন যে জীবনের উদ্দেশ্য আধ্যাত্মিক জ্ঞান অর্জন এবং আধ্যাত্মিক উন্নতির মাধ্যমে স্রষ্টার নিকটবর্তী হওয়া।
লক্ষ্য এবং অর্জন: অনেকেই জীবনের উদ্দেশ্য হিসাবে নির্দিষ্ট লক্ষ্য এবং অর্জন স্থির করেন, যেমন ক্যারিয়ার, শিক্ষা, বা ব্যক্তিগত উন্নতি।
প্রকৃতি ও পরিবেশের সংরক্ষণ: কিছু মানুষ বিশ্বাস করেন যে জীবনের উদ্দেশ্য হলো প্রকৃতি এবং পরিবেশের সংরক্ষণ এবং উন্নয়নে ভূমিকা রাখা।
এগুলো বিভিন্ন ব্যক্তির বিশ্বাস ও মূল্যবোধের উপর ভিত্তি করে পরিবর্তিত হতে পারে।

জীবনের দিক ও নির্দেশ নিয়ে কিছু সাধারণ পরামর্শ দেয়া যেতে পারে, যা ব্যক্তিগত, পেশাগত এবং সামাজিক জীবনে প্রয়োগ করা যেতে পারে:

লক্ষ্য স্থির করা: জীবনে কিছু স্বল্পমেয়াদী এবং দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য স্থির করুন। এগুলো আপনাকে একটি সুস্পষ্ট পথ প্রদর্শন করবে এবং আপনাকে উৎসাহিত করবে।
সন্তুষ্টি ও সুখ: নিজের এবং প্রিয়জনদের সুখ ও সন্তুষ্টিকে গুরুত্ব দিন। ইতিবাচক মনোভাব বজায় রেখে জীবনযাপন করুন।
সততা ও নৈতিকতা: সততা এবং নৈতিকতার মাপকাঠিতে জীবনযাপন করুন। এটি শুধুমাত্র ব্যক্তিগত সম্মান বৃদ্ধি করে না, বরং সমাজেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
শিক্ষা ও জ্ঞানার্জন: শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। নিজের জ্ঞান বৃদ্ধির জন্য নিয়মিত অধ্যয়ন করুন এবং নতুন নতুন দক্ষতা অর্জন করুন।
সামাজিক সম্পর্ক: পরিবার, বন্ধু এবং সমাজের সাথে ভালো সম্পর্ক বজায় রাখুন। সামাজিক মেলামেশা এবং সমর্থন জীবনের মান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য: স্বাস্থ্যকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিন। নিয়মিত ব্যায়াম, সুষম আহার এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিশ্চিত করুন। মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষায় ধ্যান, যোগব্যায়াম, এবং পর্যাপ্ত বিনোদন গ্রহণ করুন।
আর্থিক পরিকল্পনা: আর্থিকভাবে স্থিতিশীল থাকার জন্য সঠিকভাবে আর্থিক পরিকল্পনা করুন। সঞ্চয় এবং বিনিয়োগের মাধ্যমে ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুতি নিন।
আত্মবিশ্বাস এবং পরিশ্রম: আত্মবিশ্বাস এবং পরিশ্রমের মাধ্যমে যে কোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করুন। ধৈর্য এবং অধ্যাবসায় আপনাকে সফলতার দিকে নিয়ে যাবে।
আধ্যাত্মিকতা ও ধ্যান: নিয়মিত ধ্যান এবং আধ্যাত্মিক অনুশীলন মানসিক প্রশান্তি এবং মানসিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।
প্রকৃতি ও পরিবেশের যত্ন: প্রকৃতি এবং পরিবেশের সংরক্ষণে সচেতন হন এবং ইতিবাচক ভূমিকা পালন করুন।
এগুলো ব্যক্তিগতভাবে প্রযোজ্য হতে পারে, তবে সকলের জীবনের দিক ও নির্দেশ ভিন্ন হতে পারে। নিজের জীবনের জন্য যা সবচেয়ে উপযুক্ত তা খুঁজে বের করা গুরুত্বপূর্ণ।

Table of Contents
জীবনের উদ্দেশ্য
ড: জাকির নায়েক কি বলেছেন
জীবনের উদ্দেশ্যের রকমফের
উদ্দেশ্যহীন জীবন
অনুকরণপ্রিয় মানুষ
আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মেনে চলাই জীবনের উদ্দেশ্য
জীবনের উদ্দেশ্য
জীবনের উদ্দেশ্য টা কি
ইসলাম ধর্মে জীবনের উদ্দেশ্য নিয়ে বেশ স্পষ্ট ও সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। মূলত, ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে আমাদের জীবনের উদ্দেশ্য হলো আল্লাহকে উপাসনা করা এবং তাঁর নির্দেশনা অনুযায়ী জীবনযাপন করা। কুরআন ও হাদিসে এই বিষয়টি বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রধান কয়েকটি দিক নিম্নে তুলে ধরা হলো:

আল্লাহর উপাসনা:
কুরআনে বলা হয়েছে, “আমি জিন ও মানুষকে শুধুমাত্র আমার ইবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছি।” (সুরা আয-যারিয়াত, আয়াত ৫৬)। এই আয়াতটি স্পষ্টভাবে আমাদের জীবনের মূল উদ্দেশ্য আল্লাহর উপাসনা করা বলে উল্লেখ করেছে।হামার জীবনের উদ্দেশ্য
সৎ কাজ এবং নৈতিকতা:
ইসলামে সৎ কাজ এবং নৈতিক আচরণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তোমরা সৎ কাজ করো আল্লাহ সৎ কাজ করনেওয়ালাদের ভালবাসেন। (সুরা আল-বাকারা, আয়াত ১৯৫)। ইসলামে ভালো কাজ এবং নৈতিক আচরণের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে উৎসাহিত করা হয়।
পরকালের প্রস্তুতি:
ইসলামে বিশ্বাস করা হয় যে, দুনিয়া হলো পরকালের জন্য একটি পরীক্ষা। প্রত্যেক প্রাণী মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করবে এবং কেয়ামতের দিন তোমাদেরকে পূর্ণমাত্রায় প্রতিফল দেওয়া হবে।” (সুরা আলে ইমরান, আয়াত ১৮৫)। তাই দুনিয়াতে ভালো কাজ করে পরকালের জন্য প্রস্তুতি নেয়া ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক।
মানুষের সেবা এবং সহযোগিতা:
ইসলামে মানুষের সেবা করা এবং দুর্বলদের সাহায্য করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তোমরা পরস্পরকে সদগুণ এবং খোদাভীতি কাজে সাহায্য করো, আর পাপ ও সীমালঙ্ঘনের কাজে সহযোগিতা করো না। (সুরা আল-মায়েদা, আয়াত ২)। সামাজিক কল্যাণমূলক কাজ এবং মানবিকতার মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করার চেষ্টা করা উচিত।
আধ্যাত্মিক উন্নতি:
ইসলামে আধ্যাত্মিক উন্নতির ওপরও গুরুত্ব দেওয়া হয়। নিয়মিত নামাজ, রোজা, জাকাত এবং হজ্ব পালন করে আধ্যাত্মিক উন্নতি করা যায়।
এই দিকগুলো আমাদের জীবনের উদ্দেশ্য ও পথ নির্দেশনা হিসাবে কাজ করে এবং ইসলামের দৃষ্টিতে একটি পূর্ণাঙ্গ ও সফল জীবন যাপনের দিকনির্দেশনা প্রদান করে। জীবনের উদ্দেশ্য টা কি নিশ্চয়ই সকল প্রশংসা ও গুণগান একমাত্র সৃষ্টিকর্তা, মালিক ও প্রতিপালক সর্বশক্তিমান আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা’আলার উদ্দেশ্যে নিবেদিত, যিনি ব্যতীত প্রকৃত সত্য কোন ইলাহ নেই। অজস্র সালাত ও সালাম বর্ষিত হোক সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ রাসূল মুহাম্মদ (স), তাঁর সহধর্মিণী ও সাহাবীগণের ওপর।

ড: জাকির নায়েক কি বলেছেন
মূল লেকচারের নাম What is the Puepose of our life বা জীবনের উদ্দেশ্য টা কি? বিষয়ে দেয়া ডা. জাকির নায়েকের এ বক্তব্যটি বর্তমানে উদ্দেশ্যহীন জীবন পরিচালনায় অভ্যস্থ মুসলিমদের অবস্থান বিবেচনায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অন্যান্য বক্তব্যের মতো তাঁর এ বক্তব্যেও যেমন রয়েছে হৃদয়স্পর্শী উদ্দীপনা তেমনি রয়েছে চলার পথের সঠিক পাথেয় ও প্রেরণা। কারণ, উদ্দেহীন জীবন আর হাল বিহীন নৌকার সঠিক গন্তব্যে পৌঁছা দূরহ-ই শুধু নয়; অসম্ভবও বটে।

মানুষকে মহান আল্লাহ তা’য়ালা কোনো উদ্দেশ্য ব্যতীত সৃষ্টি করেন নি। নিশ্চয়ই মানব সৃষ্টির একটি উদ্দেশ্য রয়েছে। মানব সৃষ্টির উদ্দেশ্য সম্পর্কে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলেছেন-

‎‫وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنْسَ إِلَّا لِيَعْبُدُونِ . অর্থ: আমি জ্বীন এবং মানুষকে এই কারণে সৃষ্টি করেছি, যাতে তারা আমার ইবাদত করে।‬‎

সুতরাং দেখা যাচ্ছে মানুষ তার জীবনকে উদ্দেশ্যহীনভাবে পরিচালনা করতে পারে না। বক্ষমান লেকচারে ডা. জাকির নায়েক পবিত্র কুরআন ও হাদীসের আলোকে জীবনের উদ্দেশ্য টা কি সম্পর্কে অত্যন্ত প্রাঞ্জল ভাষায় আলোচনা করেছেন।

একটি কথা সবারই জানা দরকার যে, লিখিত বক্তৃতা ব্যতীত অন্যান্য সাধারণ বক্তৃতার ক্ষেত্রে বিষয়ের ধারাবাহিকতা রক্ষা করা ক’জন লোক জীবনের উদ্দেশ্য জানে? জীবনের উদ্দেশ্য টা কি

আমি দর্শকদের অনুরোধ করবো, আপনাদের মধ্যে কেউ যদি কখনও একটা চিন্তা করে থাকেন যে, আপনার জীবনের উদ্দেশ্যটা কী? তাহলে দয়া করে হাত তুলুন। আমি জানতে চাচ্ছি যে, এখানে দর্শকদের মাঝে ক’জন এটা নিয়ে চিন্তা করেছেন যে, আমাদের জীবনের উদ্দেশ্যটা কী? এখান থেকে দেখতে পাচ্ছি ১৫/২০ জন হাত তুলেছেন; খুব বেশি হলে ১০০জন হাত উঠিয়েছেন। এখায় প্রায় ১ লাখ মানুষ আছে। তাহলে দেখা যাচ্ছে, আমাদের জীবনের উদ্দেশ্যটা কী- এ ব্যাপারে চিন্তা-ভাবনা করার লোকসংখ্যা 0.১ শতাংশেরও কম। অনেকেই হয়তো হাত তুলতে লজ্জা পেয়েছেন, আর তাই হাত তুলেননি। তারপরও আমরা বলতে পারি যে, মানুষের মধ্যে 0.১ শতাংকের কম মানুষ এই ব্যাপারটা নিয়ে চিন্তা করে যে, আমাদের জীবনের উদ্দেশ্যটা কী?

এখন কথা হলো- জীবনের উদ্দেশ্য টা কি? এটা জানা কি খুব জরুরি?

আমি আপনাদের একটা উদাহরণ দিচ্ছি। আর সেটা হলো- মনে করুন একটি

লোক হাঁটতে হাঁটতে এক মোড়ে আসলো। তখন সে অন্য আরেক জনকে জিজ্ঞাসা করলো এই রাস্তাটা কোন দিকে গিয়েছে ভাই? পথিক তাকে বললো- আপনি কোথায় যেতে চান? লোকটি বললো- যে কোনো জায়গায়। তখন পথিক বলবে- যে কোনো পথে যান কোনো সমস্যা হবে না। এখানে এই লোকটার কোনো উদ্দেশ্য নেই। লোকটা যেসব কাজ করে তার সেই কাজগুলো কোনোরকম পার্থক্য সৃষ্টি করে না ! কারণ তার কোনো গন্তব্য নেই। আমাদের মধ্যে অনেকে ঠিক এভাবেই জীবন যাপন করছে।

জীবনের উদ্দেশ্যের রকমফের
আপনাদের আরো একটি উদাহরণ দিচ্ছি। মনে করুন একজন বিল্ডার (স্থপতি) একটি বিল্ডিং বানানো শুরু করলো। বিল্ডিংয়ের ভিত তৈরির জন্য সে মাটিতে বড় একটি গর্ত তৈরি করলো। এ সময় তাকে প্রশ্ন করা হলো- আপনার এই বিল্ডিংটা কত তলা পর্যন্ত হবে? সে বললো- আমি জানি না। প্রশ্ন করা হলো- বিল্ডিংটা কত স্কয়ার ফিট জুড়ে তৈরি করা হচ্ছে? সে বললো- এটা নিয়ে চিন্তাই করিনি। আসলে সেই বিল্ডারের কোনো উদ্দেশ্যই নেই।

একবার এক লোক তার প্রতিবেশীকে বললো- আপনার কুকুরটা সবসময় গাড়ির পিছনে ধাওয়া করে। ভাবছি এই কুকুরটা কখনও কি কোনো গাড়িকে ধরতে পারবে? প্রতিবেশী উত্তর দিল- কোনো গাড়িকে ধরতে পারবে কি না সেটা নিয়ে আমি ভাবছি না , বরং আমি ভাবছি গাড়িটা ধরতে পারলে সে তখন কী করবে। যে লোকটা বলছে, কুকুর গাড়িটা ধরতে পারবে কি না সে কিন্তু বুঝতে পারছে না। আর প্রতিবেশী, যে কুকুরটার মালিক সে কিন্তু বুঝতে পারছে যে, কুকুর যদি গাড়িটাকে ধরতে পারে তারপর সে কী করবে ! সে বুঝতে পারছে যে, এখানে কুকুরটার উদ্দেশ্যটা কী। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের অনেকেই আমাদের জীবনটাকে এইভাবে পার করে দিচ্ছি এই কুকুরটার মতোই।

উদ্দেশ্যহীন জীবন
লোকজন গ্রাজুয়েশান করে। তাদের জিজ্ঞেস করবেন, আপনি গ্রাজুয়েশন করছেন কেন? তারা আসলে কারণটা জানেনা। কারণ হলো, এই যে তারা গ্রাজুয়েশন করতে যায় গ্রাজুয়েশন করে আপনি কী করবেন? সে বললো আমি জানি না। আমাদের বেশিরভাগই জীবনটা পার করছি গন্তব্য ছাড়া লোকটার মতো অথবা কুকুরটার মতো, যে একটা গাড়িটা ধরতে পিছনে পিছনে ছুটছে কোনো উদ্দেশ্য ছাড়াই।

অনুকরণপ্রিয় মানুষ
আমাদের অনেকেই না বুঝেই অন্যের উদ্দেশ্যকে নকল করি। কোনো ছাত্রকে আপনি প্রশ্ন করবেন আপনি কমার্স পড়ছেন কেন? সে উত্তর দিবে, কারণ আমার বন্ধুও কমার্স পড়ছে। এছাড়া আবার অনেকেই অভিনেতা-অভিনেত্রী বা বিভিন্ন মডেলকে নকল করার চেষ্টা করে। অনেকেই এটা না বুঝেই করে।

একবার এক লোক গ্রাম থেকে মুম্বাইতে চলে আসলো বড়লোক হওয়ার জন্য। তাকে একবার প্রশ্ন করা হলো- আপনি মুম্বাইতে আসলেন কেন? সে তখন বললো- আমি হিন্দি সিনেমায় দেখেছি অমিতাভ বচ্চনকে, সে খুব গরিব ছিল, তারপর মুম্বাইতে এসে একরাতের মধ্যে অনেক বড়লোক হয়ে গেল। এই জন্য আপনারা প্রায়ই দেখবেন, মুম্বাইয়ে আশেপাশের বহু এলাকা থেকে মুম্বাইতে চলে আসে, যাতে একরাতে বড়লোক হতে পারে। এই কারণে আমরা দেখতে পাই মুম্বাইতে বস্তির সংখ্যাও খুব দ্রুত বাড়ছে।

অনেক সময় আপনারা দেখবেন, অভিনেতা আর মডেলরা ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হয়। তারা বিভিন্ন পণ্যের মার্কেটিং করে। একবার আমার পরিচিত একজন একটা নতুন গাড়ি কিনলো হুন্দাই আইটেমের। তাকে জিজ্ঞেস করা হলো- আপনি হুন্দাই আইটেমের গাড়ি পছন্দ করলেন কেন? সে বললো- আমার প্রিয় অভিনেতা শাহরুখ খান আর তার একটা হুন্দাই গাড়ি আছে এজন্য আমি এই হুন্দাই আইটেম গাড়ি পছন্দ করেছি।

উদ্দেশ্যহীন কাজের পরিণতি

মনে করুন, একজন শিল্পপতি একটি টেক্সটাইল ফ্যাক্টরি করলো। তাকে প্রশ্ন করা হলো- আপনি এই টেক্সটাইল ফ্যাক্টরি করলেন কেন? শিল্পপতি উত্তর দিল- আমি খোঁজখবর নিয়ে জেনেছি, টেক্সটাইল ব্যবসায় অনেক বেশি লাভ করা যায়। তাকে প্রশ্ন করা হলো- “আপনার কাছে কি এ ব্যাপারে ভালো কোনো রিপোর্ট আছে?” সে বললো-“না।” তাকে বলা হলো- ব্যবসা দেখাশুনার জন্য কি কাউকে ঠিক করেছেন বা সেই কোম্পানির জন্য কি কাউরে এক্সিকিউটিভ বানিয়েছেন?” সে বললো-“না।” তাকে প্রশ্ন করা হলো- “আপনি এখানে কত পার্সেন্ট লাভ করতে চান?” সে বললো- “আমি জানি না।” তাকে প্রশ্ন করা হলো- “আপনি টেক্সটাইল পণ্য বিক্রি করবেন কোথায়?” সে বললো- আমি জানি না।” আপনাদের কি মনে হয়- এই শিল্পপতি টেক্সটাইল ব্যবসায় কোনো লাভ করতে পারবে? প্রশ্নই আসে না।

তারপর ধরুন, আর একজন লোক, যার কোনো উদ্দেশ্য আছে। তার উদ্দেশ্য হচ্ছে- পৃথিবীর সেরা বিজ্ঞানী হওয়া।” এজন্য সে কী করলো? সে প্রথম মানব আদম (আ) থেকে শুরু বর্তমান সময় পর্যন্ত সব ইতিহাস পড়লো। সে সবকিছু পড়ে জানতে পারলো যে, পৃথিবীর মধ্যে এ পর্যন্ত অতিবাহিত সময়ের সবচেয়ে সেরা বিজ্ঞানী স্যার আইজ্যাক নিউটন। আর এ কথাটি সঠিক। এটা জানার পর লোকটা কী করলো? সে আইজ্যাক নিউটনের মতো হওয়ার জন্য মাথার চুল লম্বা রাখলো। অর্থাৎ আইজ্যাক নিউটনের মতো বাবরি। তারপর নিউটনের মতো করে সে জামাকাপড় পড়তে শুরু করলো। সেই লোক কি নিউটনের মতো বিজ্ঞানী হতে পারবে? এই লোকের একটি উদ্দেশ্য আছে, কিন্তু তার প্ল্যানিংটা ভুল। একটি প্ল্যান অবশ্য তার ঠিক যে, সে বিজ্ঞানীদের নিয়ে পড়াশুনা করেছে। তবে তার পুরো প্ল্যানিংটা ভুল।

আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মেনে চলাই জীবনের উদ্দেশ্য
এবার মূল প্রশ্নে আসি যে, আমাদের জীবনের উদ্দেশ্যটা কী? পৃথিবীতে এই যে, আমাদের অস্তিত্ব এটার উদ্দেশ্যটা কী? আপনাদের কী মনে হয়? কে এই প্রশ্নটার সঠিক উত্তর দিতে পারবেন যে, আমাদের জীবনের উদ্দেশ্যটা কী? কে সে? ডা. জাকির নায়েক? অবশ্যই এর উত্তর হবে, না। ডা. জাকির নায়েক এ প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেন না। তাহলে কি বিজ্ঞানীরা এই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবে? এখানেও উত্তর হবে, না, বিজ্ঞানীরাও এ প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবেন না। তাহলে কি দার্শনিকরা এ প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবেন? এখানেই সেই একই উত্তর যে, না, দার্শনিকরাও এ প্রশ্নের উত্তর দিতে সক্ষম নন।

এই প্রশ্নটার সবচেয়ে সেরা উত্তর যে, আমাদের জীবনের উদ্দেশ্যটা কী? এই প্রশ্নটার উত্তর দিতে পারবেন আমাদের স্রষ্টা, সর্বশক্তিমান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা। যিনি আমাদের সৃষ্টি করেছেন, তিনিই উত্তর দিতে পারবেন যে, আমাদের জীবনের উদ্দেশ্যটা কী।

আমার লেকচারের শুরুতে পবিত্র কুরআনের একটি আয়াত তেলাওয়াত করেছিলাম। সেটা হচ্ছে সূরা যারিয়াতের ৫৬ নম্বর আয়াত। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে।

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলেছেন-

‎‫وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنْسَ إِلَّا لِيَعْبُدُونِ।‬‎

অর্থ: আমি জ্বীন এবং মানুষকে এই কারণে সৃষ্টি করেছি, যাতে তারা আমার ইবাদত করে। (সূরা যারিয়াত: আয়াত-৫৬) আমি জ্বীন এবং মানুষকে সৃষ্টি করেছি শুধুমাত্র আমার ইবাদত করার জন্য।

এখানে যে আরবি শব্দটি আছে সেটা । (ইবাদাহ)। এর মূল আরবি শব্দ (আবদ)। যার অর্থ ভৃত্য অথবা দাস। (ইবাদাহ) অর্থ- সেবা করা, আনুগত্য করা, অনুগত হয়ে আত্মসমর্পণ করা। এককথায় ইবাদাহ মানে উপাসনা করা।অথবা, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার আদেশগুলো মেনে চলা, ঈশ্বরের নির্দেশগুলো মেনে চলা। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা আমাদেরকে যে কাজগুলো করার নির্দেশ দিয়েছেন, সেগুলো যদি মেনে চলি, তাহলে সেটাই হবে ইবাদাহ, সেটাই হবে উপাসনা।

যেমন ধরুন, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলেছেন, তোমরা পাঁচটি স্তম্ভ মেনে চলবে। যদি আপনি তাওহীদে বিশ্বাস করেন যে, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা ছাড়া কোনো উপাস্য নেই; তাহলে ইবাদত করছেন, আল্লাহ তায়ালার ইবাদত করছেন। যদি আপনি পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করেন, তাহলেও আপনি ইবাদত করছেন, আল্লাহ তায়ালার উপাসনা করছেন। যদি আপনি যাকাত দেন; যেটা বাধ্যতামূলক; তাহলেও আপনি আল্লাহ তায়ালার ইবাদত করছেন। যদি সিয়াম পালন করেন, তাহলেও আপনি আল্লাহ তায়ালার ইবাদত করছেন।

আল্লাহ পবিত্র কুরআনে বলেছেন যে, তোমরা তোমাদের প্রতিবেশীদের সাহায্য করো। যেটা বলা হয়েছে সূরা মাউনে। এটা করলেও আল্লাহ তায়ালার ইবাদত করা হবে।

যদি আপনি সেই কাজগুলো থেকে বিরত থাকেন, যা করতে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা নিষেধ করেছেন; তাহলেও আপনি আল্লাহ তায়ালার ইবাদত করছেন। যদি অ্যালকোহল পান করা থেকে বিরত থাকেন তাহলেও আপনি আল্লাহ তায়ালার ইবাদত করছেন। যদি শুকরের মাংস না খান তাহলেও আপনি আল্লাহ তায়ালার ইবাদত করছেন। যদি চুরি করা, প্রতারণা করা, মিথ্যা বলা ইত্যাদি থেকে বিরত থাকেন তাহলেও আপনি আল্লাহ তায়ালার ইবাদত করছেন। এককথায় আপনি যদি আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার নির্দেশগুলো মেনে চলেন, আল্লাহর কাছে নিজেকে সমর্পণ করেন তাহলেও আপনি আল্লাহ তায়ালার ইবাদাত করছেন।

উদ্দেশ্যটা যখন ISLAMIC

তবে আমার মতে, সেরা উদ্দেশ্যটা বা প্ল্যানিংটা হবে ISLAMIC. এখানে আই, এস, এল, এ, এম, আই এবং সি।

এখানে এক নম্বর হচ্ছে- 1 = ISLAMIC. আপনার উদ্দেশ্যটা হবে ISLAMIC এবং সেটা নবী করীম এর শিক্ষা অনুযায়ী হতে হবে। আপনার উদ্দেশ্যটা হবে পবিত্র কুরআনের শিক্ষা অনুযায়ী এবং হাদীসের শিক্ষা অনুযায়ী। সর্বশেষ ও চূড়ান্ত নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শিক্ষা অনুযায়ী।

দুই নম্বর হচ্ছে- S = SPECIFIC. অর্থাৎ আপনার উদ্দেশ্যটা হবে নির্দিষ্ট। উল্টাপাল্টা হলে চলবে না। এখানে একটি উদাহরণ দিচ্ছি। এক শিক্ষক তার ছাত্রদের লক্ষ্য দিয়ে তীর মারা শিখাচ্ছিলেন। এমতাবস্থায় শিক্ষক তাদের বললেন পাখিটাকে নিরিখ করো অর্থাৎ Aim করো, যেটা গাছের মগডালে বসে আছে। সবাই ধনুক তাক করলো। এমতাবস্থায় শিক্ষক বললেন, আমি না বলা পর্যন্ত কেউ তীর ছুড়বে না। শিক্ষক প্রথম ছাত্রকে বললেন, তুমি কি ধনুক তাক করেছো? ছাত্র বললো, হ্যাঁ তাক করেছি। শিক্ষক তাকে বললেন, তুমি কি দেখতে পাচ্ছো? ছাত্র বললো, আমি দেখছি- জঙ্গল, কিছু গাছপালা আর পাখিটাকেও দেখছি।

শিক্ষক দ্বিতীয় ছাত্রকে বললেন, তুমি কি দেখতে পাচ্ছো? দ্বিতীয় ছাত্র বললো, আমি দেখছি- গাছ, গাছের কিছু ডালপালা আর পাখিটাকেও দেখতে পাচ্ছি। শিক্ষক তৃতীয় ছাত্রকে বললেন, তুমি কি দেখতে পাচ্ছো? তৃতীয় ছাত্র তখন বললো, আমি দেখছি- গাছের কিছু-ডালপালা, পাখিটাকে দেখছি আর পাখিটার চোখটাকেও দেখতে পাচ্ছি। শিক্ষক চতুর্থ ছাত্রকে বললেন, তুমি কি দেখতে পাচ্ছো? চতুর্থ ছাত্র বললো, স্যার! আমি শুধু পাখির চোখটাকে দেখছি, এছাড়া আর কিছুই দেখতে পাচ্ছি না। শিক্ষক তখন চতুর্থ ছাত্রকে বললেন, তুমি এখন তীর মারতে পারো। ছাত্রটি তীর মারার সাথে সাথে তীরটি গিয়ে লাগলো পাখিটার চোখে।

উদ্দেশ্য হতে হবে নির্দিষ্ট, ফোকাস থাকতে হবে। এটা সেই লোকটার মতো হবে না, যার কোনো গন্তব্য নেই। অথবা সেই কুকুরটার মতো যেটি কোনো উদ্দেশ্য ছাড়াই গাড়ির পিছনে দৌড়াচ্ছে।

তিন নম্বর হচ্ছে- L = LUCRATIVE অর্থাৎ লাভজনক, উপকারী। এতে আমরা লাভবান হবো পরকালে, আখেরাতে। একই সাথে সেটা হতে পারে পার্থিব জীবনের জন্যও উপকারী। তবে আখেরাতের বিষয়টিই বেশি জরুরি।

আল্লাহ পবিত্র কুরআনে উল্লেখ করেছেন-

‎‫وَمِنْهُمْ مَّنْ يَقُولُ رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الْآخِرَةِ‬‎

‎‫حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ।‬‎

অর্থ: হে আমাদের প্রতিপালক! তুমি আমাদেরকে দুনিয়াতে কল্যাণ দাও আর আখেরাতেও কল্যাণ দাও এবং আমাদেরকে আগুনের শাস্তি থেকে রক্ষা করো।

(সূরা বাকারা; আয়াত-২০১)

উদ্দেশ্য হতে হবে LUCRATIVE অর্থাৎ লাভজনক, উপকারী। সেটা আখেরাতের জীবনের জন্য এবং দুনিয়াবী উপকারের জন্যও। সবচেয়ে জরুরি হলো পরকালের জীবন, এরপর হচ্ছে ইহকাল তথা পার্থিব জীবন। এই পৃথিবীর লাভের আশায় আপনারা যেন পরকালের লাভটাকে না হারান।

চার নম্বর হচ্ছে- A = APT অর্থাৎ সঠিক বা যথার্থ। আপনার উদ্দেশ্য হতে হবে সঠিক আর যথার্থ। যথার্থ উদ্দেশ্য ছাড়া সফলতা লাভ করা যায় না।

পাঁচ নম্বর হচ্ছে- M MEASUREBLE অর্থাৎ পরিমাপ। উদ্দেশ্যটাকে যেন পরিমাপ করা যায়। আর উদ্দেশ্য পরিমাপ করতে গেলে আগে এটা নির্দিষ্ট হতে হবে। উদ্দেশ্যটা নির্দিষ্ট হলেই এটাকে পরিমাপ করা যাবে। এখানে একটা উদাহরণ দিচ্ছি- ধরুন একজন বিল্ডার বললো, আমি পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু বিল্ডিংটা বানাতে চাই। উদ্দেশ্যটা এখানে নির্দিষ্ট, আর পরিমাপ করার জন্য সে জরিপ করলো পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু বিল্ডিং সম্পর্কে। আর সে জানতে পারলো যে, বর্তমানে পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু বিল্ডিং হচ্ছে- দুবাইতে অবস্থিত ‘বুর্জ আল খলিফা। আর সেটা ৮২৮ মিটার উঁচু, যা নির্দিষ্ট। এখন তাকে এমন একটা বিল্ডিং বানাতে হবে যেটা হবে ৮২৮ মিটারের চেয়ে বেশি উঁচু। এটা নির্দিষ্ট এবং একে পরিমাপও করা যায়। যদি পরিমাপ করা যায়, তাহলে সেটা তদারকিও করা যায় যে, আপনি কতখানি উদ্দেশ্য পূরণ করতে পেরেছেন।

ছয় নম্বর হচ্ছে- 1 = INTENTION অর্থাৎ নিয়ত। রাসূল বলেছেন- অর্থ: তোমাদের কাজকে বিচার করা হবে নিয়ত দিয়ে।

(সহীহ বুখারী, খণ্ড: ১; অধ্যায়: ১; হাদীস নং: ১)

নিয়তের কারণেই আপনি পুরস্কার পাবেন। আপনার নিয়ত হবে আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলকে সন্তুষ্ট করা। আপনার INTENTION বা নিয়ত এমন হবে না যে, বিখ্যাত হবো, জনপ্রিয় হবে। নিয়ত এ রকম হলে আপনার উদ্দেশ্যটা সঠিক হবে না। যদি উদ্দেশ্য হয় আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা এবং তাঁর রাসূলকে সন্তুষ্ট করা, তাহলে অবশ্যই আপনি পরকালে পুরস্কার পাবেন এবং ইনশাল্লাহ আপনি এর জন্য ইহকালেও আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার পক্ষ থেকে পুরস্কার লাভ করবেন।

সাত নম্বর হচ্ছে- C CONSISTENT অর্থাৎ ধারাবাহিকতা। আপনার উদ্দেশ্যটা হতে হবে ধারাবাহিক। সময় সংক্ষিপ্ত থাকলে ততক্ষণ পর্যন্ত ধারাবাহিকতা থাকতে হবে। সময় সীমিত না থাকলে ধারাবাহিকতা থাকতে হবে সারা জীবন। যেমন ধরুন, আপনি ঠিক করলেন, আমি রমযান মাসে প্রতিদিন অন্তত একবার কুরআন মাজীদ তিলাওয়াত করবো। অথবা আপনি ঠিক করলেন আমি রমযান মাসে প্রতিদিন ১ পারা করে কুরআন মাজীদ তিলাওয়াত করবো। আপনি যদি ধারাবাহিকতা ঠিক রাখেন তাহলে রমযানের শেষ দিনে দেখবেন আপনার পবিত্র কুরআন ৩০ পারাই পড়া শেষ হয়েছে।

যদি সময় সীমিত না থাকে, তাহলে আপনি ঠিক করলেন- আমি প্রত্যেক দিন

কুরআন তিলাওয়াত করবো। নিয়ত করলেন আমি প্রতিদিন কুরআনের এক বা

অর্ধেক পারা তিলাওয়াত করবো। এরপর আপনি প্রতিদিন এক বা অর্ধেক পারা

কুরআন তিলাওয়াত করলেন আর এভাবে ধারাবাহিক থেকে গেলেন।

ধারাবাহিকতা চলতে থাকলো একেবারে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত।

আমাদের নবী করীম বলেছেন- এক লোক নবী করীম-কে জিজ্ঞাসা করলো- আল্লাহ কোন কাজ সবচেয়ে বেশি পছন্দ করেন?” নবী করীম বললেন- আল্লাহ সেই কাজগুলো পছন্দ করেন, যেগুলোর মধ্যে ধারাবাহিকতা আছে সে কাজটা অনেক ছোটও হতে পারে।” (সহীহ মুসলিম, খণ্ড: ১; অধ্যায় সালাত ২৭২; হাদীস নং: ১৭১১)

বড় কোনো কাজ একবার করার চেয়ে ছোট কাজ বারবার করা ভালো। যে কাজগুলোর মধ্যে ধারাবাহিকতা আছে সেই কাজগুলোর গুরুত্বই সবচেয়ে বেশি। তাহলে উদ্দেশ্যটা হতে হবে ইসলামি IS L A M I-C. I তে = ISLAMIC. (ইসলামিক), S তে SPECIFIC. বা নির্দিষ্ট, L তে LUCRATIVE বা লাভজনক, A তে APT বা সঠিক, M তে MEASUREBLE বা যেটাকে পরিমাপ করা যায়, I তে INTENTION বা নিয়ত; আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা, আর C তে CONSISTENT বা ধারাবাহিকতা।

আন্তর্জাতিকইসলামিকউক্তিকবিতাখেলাগজল লিরিক্সটিপসট্রেন সময়সূচীনামের তালিকাবাংলাদেশবিনোদনভিটামিনশিক্ষাস্বাস্থ্যহামার প্রবাস

Leave a Reply

Shopping cart

0
image/svg+xml

No products in the cart.

Continue Shopping